1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

ঢাকার বায়ুদূষণ: প্রয়োজনীয় মনোযোগ কি পাচ্ছে?

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৬৭ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা ভয়াবহ অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় উপনীত হয়েছে। ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে একটি।
প্রায়ই ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। গত বছরে ডিসেম্বর মাসে এক দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী। দূষণসংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যতটা বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ক্যাপসের গবেষণায় দেখা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে বায়ুর গড় মান ছিল ২৮৮। ২০১৬ সালের পর থেকে বায়ুর মান এত খারাপ কখনোই হয়নি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বায়ুর মান ছিল ১৯৫। গত ৯ বছরে ডিসেম্বরে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ২১৯ দশমিক ৫৪। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই মান ৩১ ভাগের বেশি বেড়ে গেছে। আর ২০২৩ সালের তুলনায় বেড়েছে ২৬ ভাগেরও বেশি।
বিশ্বের ১২২ নগরীর মধ্যে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে বায়ুদূষণে চতুর্থ স্থানে ছিল ঢাকার অবস্থান। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আইকিউ এয়ারের মানসূচকে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ২১৯। বায়ুর এই মানকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ ঢাকার বায়ুর মান ১৬২ হয়।
বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকাবাসীর উদ্দেশে পরামর্শ, বাইরে বের হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে, খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না এবং ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে ২৮ গুণ বেশি।
গত রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ৪৫২, পরে তা আরও বেড়েছিল। বায়ুর মান ৩০০ থেকে বেশি হলেই তাকে দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করা হয়। রোববার ঢাকার দূষিত ১০টি স্থানের প্রতিটির মানই ছিল দুর্যোগপূর্ণ। এর মধ্যে গুলশানের দুটি স্থানের স্কোর ছিল ৭০০ এর উপরে।
যদি কোনও এলাকায় পরপর ৩ দিন ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বায়ু মান ৩০০ থেকে বেশি থাকে তবে সেই অঞ্চলে স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি করা দরকার বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদেরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ু দূষণের ফলে শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী এবং দীর্ঘমেয়াদে অসুস্থ মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, বন্ধ্যত্ব এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়।
বায়ু দূষণে স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের কার্য নির্বাহী সভাপতি এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বায়ু দূষিত হলে শ্বাসতন্ত্রীয় রোগ বেড়ে যায়, যেমন হাঁচি, কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসের টান, যক্ষ্মা হয়। এর বাইরেও স্নায়ুতন্ত্রের রোগ হয় অর্থাৎ মেজাজ খিটখিটে, ঘুম কম, উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়, হার্টের অসুখ হয়, পৃথিবীতে যত মানুষের হার্ট এটাকে হয়, তার চারভাগের এক ভাগ দূষিত বায়ুর কারণে হয়।
তিনি আরও বলেন, যেসব পদার্থ দ্বারা বায়ু দূষণ হয়, তার মধ্যে কিছু পদার্থ দ্বারা ছেলে মেয়ের সন্তান জন্মদান ক্ষমতা কমে যায়। ফুসফুসের ক্যানসার বেড়ে যায়। বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা নিশ্বাসের মাধ্যমে রক্তে মিশে গিয়ে লিভার, কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদে নানা শারীরিক অসুস্থতা তৈরি করে। দূষিত বাতাসে এতসব ক্ষতিকর পদার্থ থাকে মানুষের প্রতিটা অঙ্গপ্রত্যঙ্গর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং মানুষের গড় আয়ুও কমে যায়।
বায়ু দূষণের ক্ষতির মাত্রা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, কতটা বিষাক্ত বায়ু আমরা গ্রহণ করছি, তা ভেবে আমি আতঙ্কিত। এই বিষাক্ত বায়ু আমাদের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুকি তৈরি করছে। বর্তমানে বায়ু দূষণের যে মাত্রা তাতে এটাকে দুর্যোগ ঘোষণা করা উচিৎ। দিল্লির মতো আমাদের স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা উচিৎ।
তিনি আরও বলেন, বায়ুদূষণকে গায়ের জোড়ে উপেক্ষা করলেও এর পরিণতি থেকে আমাদের মুক্তি নেই। বায়ু দূষণ রোধে বড় ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কঠোর আইন করা দরকার। রাজধানীতে যে কোন ধরনের কর্মকাণ্ড হোক না কেনো, সেখান থেকে কোনও দূষণ যেন বায়ুতে না মিশে, সেই জন্যে যা যা করণীয় তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। দূষণ কমাতে একটি গাইডলাইন তৈরি করে, সেটা মনিটরিংয়ের জন্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..